জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, কোভিড উত্তর পৃথিবীতে আমরা ভেবেছিলাম বিশ্বের সকল মানুষ মানবিক হয়ে উঠবে। কিন্তু আমরা দেখলাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করছে। ইসরাইল ফিলিস্তিনের শিশু ও নারীদের ওপর হামলা করছে। মিয়ানমারে লক্ষ লক্ষ মানুষ শরণার্থী হচ্ছে। এর মানে হচ্ছে আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত পৃথিবী পাইনি। আমরা সমতার পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারিনি।
তিনি বলেন, অসহায় নারী এবং শিশুদের শক্তিধর ও সবলরা নির্যাতন করছে। যুদ্ধের নামে হত্যা করছে। আমাদের দেশে প্রখ্যাত শিল্পী আত্মহত্যা করছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করছে। এর মানে সকল কিছু নিয়ন্ত্রণের কথা যে মানুষ বলতে চায় সেখানে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি।
শনিবার রাজধানীর শুক্রাবাদে পিজিডি ভবনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম (পিজিডি) আয়োজিত ‘ওয়ার্কশপ অন ডেটা অ্যানালাইটিকস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘হারউইল’ এর প্রতিষ্ঠাতা ফারহানা হাসান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, তোমরা যারা নানা কলেজ থেকে এসেছ, জীবনকে সম্পূর্ণ ইতিবাচকভাবে দেখতে হবে। কোনো ধরনের হতাশা তোমাদের যেন স্পর্শ না করে। ভাবতে হবে এই পৃথিবীতে তোমাদের যে আগমন এবং বসতি সেটিকে আনন্দময় করতে হবে। এই পৃথিবীকে আরও সুন্দর করতে হবে। তোমার জন্য কেউ পথ তৈরি করে দেবে না। সম্পূর্ণভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখতে হবে। আত্মপ্রত্যয়ী হতে হবে।
বর্তমান সময়ে ডেটা অ্যানালাইটিকসের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ডেটা অ্যানালাইটিকস সমাজকে আরও যৌক্তিক করে, আধুনিক করে। এই সংখ্যা মানুষের জীবনকে সফেসটিকেইটেড করার জন্য কোনটি সুয়েটেবল সেই তথ্য দেয়। এটি শুধু সংখ্যার বিশ্লেষণ কিংবা গ্রাফিক্যাল প্রেজেনটেশন তা নয়। আমরা যেই সোসাইটি গড়তে চাই সেটিকে উপস্থাপন করে এই ডেটা অ্যানালাইটিকস। এটি শুধু প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ নয়, নতুন তথ্যের অনুসন্ধানও করে।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, একজন সাদি মহম্মদ, একজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যখন আত্মহননের পথ বেছে নেয়। একজন শিশু যখন বুলেটবিদ্ধ হয়ে স্কুলে যায়, এই একটি সংখ্যার ভেতরেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা থাকে। এই জায়গাগুলো বিশ্লেষণ করে পোস্ট মডার্নিজম সোসাইটিতে যেন একজন মানুষও আত্মহত্যার পথ বেছে না নেয় সেটিকে নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যার বিচারে আমরা একজনকেও এক্সক্লুড করতে চাই না। উপাত্ত বিশ্লেষণ আমাদের তাই শেখায় সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় একজনও যেন বাদ না যায়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং পোস্ট মডার্ন সোসাইটিতে পৃথিবী এগিয়ে যাবে সম্মিলিতভাবে। একজনও যেন বাদ না পড়ে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন। কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হারউইল এর গ্লোবাল স্টিম লিডার রাইমা ইসলাম, হারউইল এর গ্লোবাল স্টিম কো-অর্ডিনেটর সায়রা মাহমুদ। কর্মশালায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর ১০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।