ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলে ফের আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ত্রিশ মিনিট পরে এক ছাত্রী সিলিন্ডারের ক্যাবল বন্ধ করে দিলে আগুন নিভে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হলের ডাইনিংয়ে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় হলে অবস্থানরত ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলটির ডাইনিংয়ের গ্যাসের চুলায় গতকাল নতুন সিলিন্ডার লাগানো হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ছবিরা খাতুন নামের কর্মী গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপের মুখ থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে এক ছাত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডারের লাইন বন্ধ করে দিলে আগুন নিভে যায়। পরে সকাল সাতটার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা আগুন লাগার কারণ বিশ্লেষণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের লিডার রফিকুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগার ঘটনাটি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ঘটেছে। সিলিন্ডারের পাইপে লুজ কানেকশন ছিল। যার ফলে সিলিন্ডার অন করতে গেলেই আগুনের ঘটনা ঘটে। আমরা সবকিছু চেক করেছি। আপাতত বিপদমুক্ত। ঘটনার জন্য হলের ম্যানেজারের গাফিলতির রয়েছে বলে বোঝা যায়।
হলের আবাসিক ছাত্রীরা জানিয়েছেন, সকালে ফজর নামাজের পর হঠাৎ ডাইনিংয়ে তারা আগুন দেখতে পান৷ পরে হলের সব ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাৎক্ষণিক জরুরি সেবার নম্বর (৯৯৯) এ কল দেন তারা৷ তাদের দাবি, হলে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে এবং এর ব্যবহার বিধি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতে হবে। এ ছাড়া তারা ক্যাম্পাস নিকটস্থ জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন নির্মাণের দাবিও জানান।
এদিকে গত কয়েক মাসে হলটিতে অন্তত ১০ বার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। বিদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কায় গত ৯ সেপ্টেম্বর হলটির পুরোনো ব্লকের প্রায় একশ ছাত্রীকে টিচার্স কোয়ার্টারে থাকার ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা রোধে হলটি পুনরায় যথাযথভাবে সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রীরা।
হলের ডাইনিং ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা নারগিস খাতুন বলেন, হলে বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে হিটার চালানো আপাতত বন্ধ রাখা হয়। আমাদের দুই জায়গায় রান্নার জন্য একটি চুলায় সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বেশ কিছুদিন যাবত গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর আগেও ছবিরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেছে। তবে আজকের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত।
এ বিষয়ে হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক জানান, তাকে কল দেওয়ার পরপরই তিনি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ছাত্রীদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে শনিবারের মধ্যেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হবে।