শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ৮ রান। পেসার মোহাম্মদ আলির প্রথম বলে ইমাদ ওয়াসিম এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন নাসিম শাহকে। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ অনেকটাই হাতে নিয়ে আসেন নাসিম। ৪ বলে দরকার ৩।
পরের দুই বলে দুই রান হলে ২ বলে লাগে মাত্র ১। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের জয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। এমন সময়ে আবার নাটক। পঞ্চম বলে আলি আউট করে দেন ৯ বলে ১৭ রানের মারকুটে ইনিংস খেলা নাসিমকে।
ফলে শেষ বলে ১ রান দরকার পড়ে ইসলামাবাদের। মুলতান শিবির তখনও হাল ছাড়েনি। ডট হলেই তো ম্যাচ সুপার ওভারে। তবে নাসিম শাহ শেষ করে আসতে না পারলেও তার ভাই হুনাইন শাহ শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেন। উল্লাসে ফেটে পড়ে ইসলামাবাদ শিবির।
পাকিস্তান সুপার লিগে টানা চতুর্থবার ফাইনালে উঠেছিল মুলতান সুলতানস। তবে এই সাফল্যের পেছনে ব্যর্থতার গল্পও আছে। ২০২১ সালে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়। পরের দুই আসরে ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ।
টানা তৃতীয়বার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হলো মুলতানকে। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দলকে ২ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো পিএসএলের শিরোপা ঘরে তুললো শাদাব খানের ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। এর আগে ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি।
করাচিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইসলামাবাদের জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৬০ রানের। ওপেনার মার্টিন গাপটিল ৩২ বলে ৫০ আর আজম খান ২২ বলে ৩০ করলেও বাকিদের ব্যর্থতায় ১২৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে তারা।
সেখান থেকে ইমাদ ওয়াসিম আর নাসিম শাহর ১৬ বলে ৩০ রানের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পথে হাঁটে ইসলামাবাদ। এরপর শেষ ওভারের উত্তেজনা ছাপিয়ে শেষ হাসি শাদাবের দলের। ১৭ বলে ১৯ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন ইমাদ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উসমান খানের ফিফটি আর শেষদিকে ইফতিখার আহমেদের দুর্দান্ত লড়াইয়ে ৯ উইকেটে ১৫৯ রানের পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল মুলতান সুলতানস।
মোহাম্মদ রিজওয়ানের ২৬ বলে ২৬ আর উসমান খানের ৪০ বলে ৫৭ রানের ইনিংসের পরও ১২৭ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল মুলতান। সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন ইফতিখার।
শেষ উইকেটে মোহাম্মদ আলিকে সঙ্গে নিয়ে ১৯ বলে ৩২ রান যোগ করেন ইফতিখার। এর মধ্যে আলি ৩ বল খেলে কোনো রান করেননি, জুটির পুরো রানই করেন ইফতিখার। ২০ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার।
মুলতানের বিদেশি ব্যাটার জনসন চার্লস (৬ বলে ৪), ক্রিস জর্ডান (১ বলে ০) হন ব্যর্থ। তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ডেভিড উইলিও (৩ বলে ৬)।
ইমাদ ওয়াসিম ২৩ রান দিয়ে একাই নেন ৫ উইকেট। ৩২ রান খরচায় ৩টি উইকেট পান আরেক স্পিনার শাদাব খান।