এভাবেও হেরে যাওয়া যায়! গুজরাট টাইটান্সকে ১৬৮ রানে আটকে দিয়ে সহজ জয়ের পথে ছুটছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ৭ উইকেট হাতে রেখে শেষ ৩৬ বলে দরকার ছিল ৪৮ রান। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মুম্বাই শেষ পর্যন্ত হেরে যেতে পারে, তেমন আশঙ্কা প্রকাশ করা লোক হয়তো হাতেও গুনে পাওয়া যাবে না। কিন্তু শেষ ৬ ওভারে বদলে গেলো চিত্রনাট্য। এই সময়ে ১১ ডট বল দিয়ে ৬ উইকেট নিলো গুজরাট টাইটান্স। বোলারদের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে মুম্বাইয়ের জয় একপ্রকার ছিনিয়ে নিলো গত দুই আসরের ফাইনালিস্টরা।
সাই কিশোর, রশিদ খান, স্পেন্সার জনসন, মোহিত শর্মা ও উমেশ যাদব- প্রত্যেকেই বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অবদান রেখেছেন। তাতে ৬ রানে জিতেছে গুজরাট। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এটি তাদের তৃতীয় জয়।
গুজরাটের গত দুই আসরের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া এবার মুম্বাইয়ের নেতৃত্বে। প্রথম ম্যাচেই সাবেক দলের মুখোমুখি হলেন তিনি। শেষ ওভারে জয়ের নায়ক হতে পারতেন। প্রয়োজন ছিল ১৯ রানের, টানা ছয়-চার মেরে ব্যবধান কমালেও পারেননি তিনি।
এই ম্যাচ দিয়ে নেতৃত্বে অভিষেক হয়েছে শুবমান গিলের। যশপ্রীত বুমরার নিয়ন্ত্রিত ও ক্ষুরধার বোলিংয়ে তার দল গুজরাট ৬ উইকেটে ১৬৮ রানে থামে। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মুম্বাই পেসার। সাত বোলারের মধ্যে জেরাল্ড কোয়েটজে দুই উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সফল বোলার।
ঋদ্ধিমান সাহা ও গিলের ওপেনিং জুটি ৩১ রানের বেশি হতে দেননি বুমরা। ঋদ্ধিমান ১৯ রানে বোল্ড হন। তারপর সাই সুদর্শনকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়ে ফেরেন গিল। ২২ বলে দ্বিতীয় সেরা ৩১ রান করেন গুজরাট অধিনায়ক।
১৭তম ওভারে ডেভিড মিলার (১২) ও সুদর্শন (৪৫) ইনিংস সেরা ব্যাটিং করে বুমরার শিকার হন। শেষ দিকে রাহুল তেওয়াতিয়ার ব্যাটে দেড়শ ছাড়ায় গুজরাট, ২২ রান করেন তিনি।
লক্ষ্য বড় দিতে না পারলেও শুরুতেই ধাক্কা দেয় গুজরাট। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ইনিংসের চতুর্থ বলে ফেরান ইশান কিষাণকে। তারপর তৃতীয় ওভারে নামান ধীরকে শিকার করেন তিনি। ৩০ রানে ২ উইকেট হারানো মুম্বাইকে ম্যাচে ফেরায় রোহিত শর্মা ও ডেভাল্ড ব্রেভিস জুটি। তারা ৭৭ রান যোগ করেন তৃতীয় উইকেটটে। দুজনই চল্লিশ পার করলেও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। রোহিতকে ৪৩ রানে থামান সাই কিশোর।
আরও পড়ুন- আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন মুস্তাফিজ
১৪ ওভার শেষে মুম্বাইয়ের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১২১ রান। জয় তখন সময়ের ব্যাপার। ১৬তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ম্যাচ বদলে দেন মোহিত। ৪৬ রানে তাকে ফিরতি ক্যাচ দেন ব্রেভিস। পরের ওভারে রশিদ খান ৩ রান দিলে চাপে পড়ে মুম্বাই। মোহিত পরের ওভারে ৯ রান দিয়ে টিম ডেভিডকে (১১) আউট করে তাদের আরও বিপদে ফেলেন।
১৯তম ওভারে স্পেন্সার জনসন জোড়া আঘাত করেন। তিলক ভার্মা (২৫) ও কোয়েটজেকে (১) হারিয়ে ছন্দপতন হয় মুম্বাইয়ের। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৯ রান। হার্দিক প্রথম দুই বলে উমেশকে ছয় ও চার মেরে চাপ কমান। কিন্তু পরের দুই বলে হার্দিক ও পিযুষ চাওলাকে আউট করে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন উমেশ। শেষ দুই বলে ৯ রান আর তুলতে পারেনি মুম্বাই, আসে মাত্র ২ রান। ৯ উইকেটে তারা থামে ১৬২ রানে।
বলার মতো ব্যাপার হলো, এনিয়ে মুম্বাই টানা ১২ আসর শুরু করলো হার দিয়ে। অবশ্য এই সময়ে তারা পাঁচটি ট্রফি জিতেছে। শেষবার তারা আইপিএলে জয় দিয়ে শুরু করেছিল ২০১২ সালে।