সাত বছর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিল বার্সেলোনা এই পিএসজির বিপক্ষে। এবার সেই প্রতিশোধ নিলো ফরাসি ক্লাব। ঘরের মাঠে ৩-২ গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ হেরেছিল পিএএসজি। তারপর ন্যু ক্যাম্পে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় লেগ জিতলো ৪-১ গোলে। তাতে ৬-৪ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে উঠলো প্যারিস ক্লাব।
ন্যু ক্যাম্প যেন রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল। ২০১৯ সালের পর প্রথমবার দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলতে দেখবেন, এই স্বপ্ন তাদের চোখে চিকচিক করছিল। সমর্থনে যেন কোনও কমতি না থাকে, সেই চেষ্টা ছিল সর্বোচ্চ। তাদের উন্মাদনা এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, পিএসজির টিম বাস ভেবে নিজেদের টিম বাসেই ভুল করে আক্রমণ করে বসে।
আনন্দের সীমা লংঘন হয়েছিল বটে। তা আরও আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে ১২ মিনিটে রাফিনহার গোলে। লামিনের ইয়ামালের ক্ষিপ্রতায় পিএসজির জাল কাঁপিয়ে বার্সার ভক্তদের হৃদয়ে আলোড়ন তোলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে ইয়ামালের শক্তিশালী শট রাফিনহাকে অবাক করে দিয়ে তার ঊরুতে লেগে বল জালে জড়ায়।
কিছুক্ষণ পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল। রবার্ট লেভানডোভস্কির শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। তারপর দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের শট ঠেকিয়ে বার্সা শিবিরে স্বস্তি এনে দেন গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের নতুন স্পিন কোচ পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদ
কিন্তু হুট করেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় বার্সা। ২৯ মিনিটে যখন রোনাল্ড আরাউজো লাল কার্ড দেখেন। বারকোলা বল নিয়ে আক্রমণ চালান, তার সামনে ছিলেন শুধু টের স্টেগেন। বক্সে ঢোকার আগ মুহূর্তে তাকে ফাউল করার শাস্তি পান আরাউজো, ফ্রি কিক দেন রেফারি। পেনাল্টি হয়েছে কি না জানতে রেফারি রিপ্লে দেখেন, তবে ফ্রি কিকের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
১০ জন হয়েই বার্সা যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পুরোটা সময় সাবেক ক্লাবের ভক্তদের কাছে উত্ত্যক্তের শিকার উসমান দেম্বেলে তাদের নিস্তব্ধ করে দেন। ৪০ মিনিটে বারকোলার দুর্দান্ত পাস ধরে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান তিনি। ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোলে দুই লেগের অগ্রগামিতায় ব্যবধান কমে দাঁড়ায় এক গোলে।
বিরতির পর ছন্নছাড়া বার্সা। ৫৪ মিনিটে দেম্বেলের পাস ধরে ২২ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে স্কোর সমান করেন ভিতিনহা। জোয়াও কানসেলোর কারণে কাতালানদের ম্যাচে টিকে থাকার সব আশা শেষ হয়ে যায়। অনর্থকভাবে দেম্বেলেকে ট্যাকল করে ফেলে দেন তিনি। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। ৬১ মিনিটে এমবাপ্পে ডান পায়ের উঁচু শটে গোল করেন।
মাঝে ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠের পাশে অবস্থিত ক্যামেরার সামনে কুশনে লাথি দিয়ে লাল কার্ড দেখেন কোচ জাভি হার্নান্দেজ।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে এমবাপ্পে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন।