উচ্চ রক্তচাপ কিন্তু সবসময় উল্লেখযোগ্য লক্ষণ সৃষ্টি করে না। উপসর্গহীন হলেও এর ঝুঁকি কিন্তু কম না। উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াকার ফ্যামিলি কেয়ারের চিকিৎসক ডা. রজার্স ওয়াকার জানান, বিভিন্ন জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এবং প্রয়োজনে ওষুধের মাধ্যমে রক্তচাপ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ছয়টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আয়ত্ত করতে পারলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে জানান ডা. রজার্স (রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রপ্ত করুন এই ৬ অভ্যাস)।
১। ফল, শাকসবজি এবং উদ্ভিজ্জ খাবার খান
ফল এবং শাকসবজি আমাদের সবার জন্যই উপকারী। উদ্ভিদে ভিটামিন, ফাইবার, ফাইটোকেমিক্যালস এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েডসহ অনেক যৌগ থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন কোয়েরসেটিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েড যা আপেল, পেঁয়াজসহ আরও অনেক ফল এবং সবজিতে রয়েছে। কোয়েরসেটিন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ফল ও সবজি প্রচুর ফাইবার সরবরাহ করে। ফাইবার রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। মটরশুঁটি, নাশপাতি এবং মসুর ডালে পাবেন পর্যাপ্ত ফাইবার।
২। লবণের গোপন উৎস সম্পর্কে সতর্ক থাকুন
রক্তচাপ বাড়ায় এমন খাবারগুলো খাদ্য তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলুন। এর মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত এবং ভারী মিহি খাবার। এগুলোর মধ্যে সোডিয়াম বেশি থাকে এমন খাবারও রয়েছে। সোডিয়াম খাবারে লুকিয়ে থাকতে পারে। এমনকি সুপারশপগুলোতে থাকা স্বাস্থ্যকর টিনজাত স্যুপেও থাকতে পারে বাড়তি লবণ। এ ধরনের খাবার কেনার আগে সবসময় উপাদান লেবেল চেক করুন।
আরও পড়ুন-ভিটামিন কে এর ঘাটতি হলে কীভাবে বুঝবেন?
৩। নিয়মিত ব্যায়াম করুন
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। আপনি এটিকে সারা দিনে ১০ মিনিটের ছোট অংশে ভাগ করে নিতে পারেন। ব্যায়াম কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
৪। বেশি করে পানি পান করুন
পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করলে যেমন শরীর ভালো থাকে, তেমনি রক্তচাপ স্বাভাবিক করতেও সহায়তা করে এই অভ্যাস। বাইরে বের হওয়ার সময় পানির বোতল সঙ্গে রাখবেন। অফিসে কাজের ডেস্কেও পানি ভর্তি বোতল রাখুন ও কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন।
৫। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন
স্ট্রেস নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। এতে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান, বই পড়া বা প্রকৃতিতে সময় কাটানোর মতো কাজগুলো করে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
৬। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
ঘুম কোনও বিলাসিতা নয়। শরীরের প্রতি রাতে ঘুমের প্রয়োজন, এবং যদি আপনি ক্রমাগত কম ঘুমিয়ে থাকেন তবে এটি আপনার রক্তচাপকে অনিয়ন্ত্রিত করে দিতে পারে। প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। একটি ঘুমানোর রুটিন তৈরি করুন।
(রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রপ্ত করুন এই ৬ অভ্যাস)