সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালো মানের চাল বের করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের চাল প্রবেশ করানোর অপরাধে নওগাঁর মহাদেবপুরে খাদ্যগুদামের দুই কর্মকর্তাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে (সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালোটা সরিয়ে রাখা হচ্ছে নিম্নমানের চাল)।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। রাতে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মাহমুদুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন নওগাঁ শহরের খাস-নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা খাদ্যগুদামের খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম (৪৬), বদলগাছী থানার দ্বাড়িশন গ্রামের বাসিন্দা ও উপখাদ্য পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম (৪৯) ও মহাদেবপুর থানার চকগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা খাদ্যগুদামের শ্রমিক সর্দার আজমের আলী (৫২)।
আরও পড়ুন- চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াতে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠি
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মহাদেবপুর উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসান গত দুই বছর ধরে কর্মরত আছেন। গত ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহাগ এলএসডি’র ১ নম্বর গুদামের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি ট্রাক দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তিনি উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসানকে ফোনে ডেকে নেন। এরপর সেখানে উপখাদ্য পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম ও আজমের আলীকে দেখতে পান। ওই ট্রাক থেকে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের ৩০০ বস্তা চাল ১ নম্বর গুদামে রাখা হয়েছে। বাকি ১২০ বস্তা চাল গুদামজাত করার অপেক্ষায় ট্রাকের ওপরে আছে। খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসানের কাছে গুদামের ভেতরে চাল ঢোকানোর কোনও সরকারি নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চান ইউএনও। মোহাজের হাসান সাফ জানিয়ে দেন এমন কোনও নির্দেশনা নেই।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে রাশেদুল ইসলাম ও আজমের আলী কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনিও কোনও জবাব দিতে পারেননি। এ ছাড়া তার (আতিকুল ইসলাম) জানাশোনাতেই চালের বস্তাগুলো পরিবর্তন করা হচ্ছিল বলে জানা যায়। পরে পুলিশে খবর দিলে ইউএনও’র নির্দেশে মোট ৪২০ বস্তা (প্রতিটি ৩০ কেজি) চালসহ ট্রাক থানায় পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে ১ নম্বর গুদামটি সিলগালা করা হয়।
মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমদ বলেন, ‘আতিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম ও আজমের আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জন মিলে পরস্পর যোগসাজশে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভালো মানের চাল গুদামের মধ্য থেকে বের করে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের চাল গুদামের মধ্যে ঢোকানোর চেষ্টা করছিল। অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে (সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালোটা সরিয়ে রাখা হচ্ছে নিম্নমানের চাল)।’