বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, ‘এরা দেশ বাঁচানোর আন্দোলন করতে জানে না, এরা তাদের দল রক্ষার আন্দোলন করে। এরা দেশকে পুড়িয়ে দিয়ে দেশ ধ্বংসের রাজনীতি করে। দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে এরাই বিশ্বসভায় আমাদের মাথা হেট করে দিয়েছিল।’
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী কলেজে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু বিদস-২০২৪ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের দেশের মানুষদের হত্যা করেছিল। তারা জাতির পিতার মহানুভবতাকে দুর্বলতা ভেবে তার সরকারকে উৎখাত করার জন্য জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। এই দেশবিরোধী অপশক্তি এখন একই ধারায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরোধিতা করছে। সরকারের সমালোচনা বা বিরোধিতা থাকতেই পারে, তবে সে বিরোধিতা যদি দেশের বিরুদ্ধে, দেশের ১৭ কোটি মানুষের বিপক্ষে হয় অবশ্যই সেটি মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যে দেশ উন্নয়ন, অগ্রগতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী হলেন মানবিকতা ও মানবতার মা। দেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সে প্রত্যাশা পূরণের একমাত্র আস্থাশীল ঠিকানা হলো শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নপূরণের জন্য আমাদেরকে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকেই কাজ করতে হবে। আমরা এমন এক নেত্রীকে পেয়েছি যার ওপর আস্থা রাখা যায়, যাকে ভালোবাসা যায়, ভরসা করা যায়।’
জাতির পিতার কথা স্মরণ করে নাছিম বলেন, ‘জাতির পিতার আগমনের মধ্য দিয়ে আমাদের এই পবিত্র মাতৃভূমি সেদিন আলোকিত হয়েছিল। তার আগমনের মাধ্যমে বাঙালির জাতিসত্তা বিকশিত হওয়ার মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন, অগ্রযাত্রার যে পথ তৈরি হয়েছিল সেখান থেকেই আজ আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান। তার কর্মময় জীবন আমাদের যেমন জানা প্রয়োজন, তেমনই তার জীবনধারা, ত্যাগের ইতিহাস, মানুষকে ভালোবাসার ইতিহাস, দেশের মাটির প্রতি তার নজিরবিহীন ভালোবাসার ইতিহাস থেকে আমাদের শিখতে হবে এবং তা উপলব্ধি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা তার সারাটা জীবন দেশের মানুষের জন্য স্যাক্রিফাইস করে গেছেন। তিনি বারবার কারাগারে গিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তার লক্ষ্য ও স্বপ্ন ছিল বাঙালির অধিকার, বাঙালির অগ্রযাত্রা ও আত্মপরিচয়। তিনি চেয়েছিলেন বাঙালিকে স্বাধীন জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে। সম্মানিত জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় পরিচিতি দিতে।’
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘জাতির পিতা তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পরিবারের ১৮ সদস্যকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তারা ভেবেছিল জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারলে বাঙালির যে স্বপ্ন সেটিকে নষ্ট করতে পারবে। তারা চেয়েছিল জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে রূপান্তর করতে। তাদের সেই দুঃস্বপ্ন পূরণ হয়নি। যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বহমান থাকবে ততদিন বাংলাদেশের মর্যাদা, অস্তিত্ব ও সম্মান থাকবে। কেউ এটিকে নষ্ট করতে পারবে না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ জুলহাস উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিদ্ধেশ্বরী কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি ও ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন। স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধেশ্বরী কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাবেক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবুল বাশারসহ কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।